ঢাকা, রবিবার, জুন ২৯, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ট্রাম্প-নেতানিয়াহুর প্রতারণামূলক কৌশল ফাঁস: আলোচনার ভান করে ইরানে হামলা!

মুক্তধ্বনি নিউজ ডেস্ক

মুক্তধ্বনি নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪ জুন, ২০২৫, ০৮:৫৪ পিএম

ট্রাম্প-নেতানিয়াহুর প্রতারণামূলক কৌশল ফাঁস: আলোচনার ভান করে ইরানে হামলা!
HTML tutorial

ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে একটি সুপরিকল্পিত প্রতারণামূলক প্রচারণা চালায়, যার মাধ্যমে তারা ইরানকে বুঝিয়ে দিতে চায় যে, ইসরায়েল তার পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার কোনো প্রস্তুতি নিচ্ছে না। কিন্তু বাস্তবে এর বিপরীত ছিল। এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা শুক্রবার টাইমস অব ইসরায়েল-কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এই প্রচারণার অংশ হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই অংশ নেন। সূত্র জানায়, সোমবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হামলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরই ট্রাম্পকে জানানো হয় এবং তাদের মধ্যে ৪০ মিনিটের ফোনালাপও হয়।

এরপর ইসরায়েলি গণমাধ্যমে "লিক" করে দেওয়া হয় যে, ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে ইরানে হামলা বন্ধ রাখতে বলেছেন, এবং পারমাণবিক আলোচনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো সামরিক পদক্ষেপ না নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। কিন্তু কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, এই তথ্যগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ছিল—এই সবই ছিল ইরানকে বিভ্রান্ত করার জন্য একটি কৌশলী নাটক।

📌 হোস্টেজ আলোচনা এবং ভুয়া অগ্রগতি

পরদিন, নেতানিয়াহু একটি ভিডিও বার্তায় জানান, হামাসের সঙ্গে জিম্মি বিনিময় আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রী গিদেওন সাআরও একই বার্তা দেন। তবে আরব কূটনীতিকরা বলেন, বাস্তবে আলোচনায় তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। ধারণা করা হয়, এটি ছিল ইসরায়েলি অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে চাপে ফেলার একটি পদক্ষেপ। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটি ছিল ইরানকে বিভ্রান্ত করারই অংশ।

📌 ভুয়া বৈঠক, ভুয়া সফর

ইসরায়েল ঘোষণা দেয় যে, স্ট্র্যাটেজিক অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রী রন ডারমার এবং মোসাদের প্রধান ডেভিড বারনিয়া যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের সঙ্গে আলোচনায়। দাবি করা হয়, আলোচনার লক্ষ্য ছিল ইসরায়েলের অবস্থান পরিষ্কার করা। কিন্তু টাইমস অব ইসরায়েল নিশ্চিত করে, ঐ বৈঠকের কোনো সিডিউলই ছিল না।

📌 ‘ব্যবসা যথারীতি’ – নেতানিয়াহুর ছুটি, বিয়ের প্রস্তুতি

অভিযান শুরুর ঠিক আগের দিন নেতানিয়াহুর অফিস থেকে জানানো হয়, তিনি উত্তর ইসরায়েলে ছুটি কাটাতে যাচ্ছেন। এছাড়া তার ছেলের আসন্ন বিয়ের প্রস্তুতিও চলতে থাকে, যাতে ইরান আরও আত্মবিশ্বাসী হয় যে ইসরায়েল এখনই হামলা করবে না।

📌 ট্রাম্প ও হাকাবির সমর্থন

এই বিভ্রান্তির খেলায় ট্রাম্পও ভূমিকা রাখেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ইসরায়েল হয়তো ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালাতে পারে, কিন্তু তিনি পরামর্শ দেন, ইরান যদি কিছু ছাড় দেয়, তাহলে একটি সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব।

মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হাকাবি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সম্মতি ছাড়া ইসরায়েল ইরানে হামলা করবে না।

📌 ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি

এ ধরনের বিভ্রান্তিমূলক কৌশল অতীতেও ব্যবহার করেছে ইসরায়েল। ২০০৮-০৯ সালে গাজায় “অপারেশন কাস্ট লিড” শুরু হওয়ার আগেও নিরাপত্তা মিটিংয়ের প্রকৃত উদ্দেশ্য গোপন রেখে ভিন্ন বার্তা প্রচার করা হয়েছিল।

📌 ফলাফল

এখনও নিশ্চিতভাবে বলা না গেলেও মনে হচ্ছে, ইসরায়েলি কৌশল সফল হয়েছে। ইরানে প্রথম দফার হামলায় একাধিক ঊর্ধ্বতন সামরিক কমান্ডার নিজ বাড়িতে নিহত হয়েছেন এবং তাদের প্রস্তুতির কোনো ইঙ্গিত ছিল না।

সবচেয়ে চমকপ্রদ বিষয়, ইসরায়েলের মন্ত্রীরা এই অপারেশনের কোনো তথ্য ফাঁস করেননি, যা গাজা যুদ্ধের সময় বারবার ঘটেছে।

মু্ক্তধ্বনি অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

Google News Icon গুগল নিউজে দেখুন

ইরান-ইসরাইল যুদ্ধ রিলেটেড নিউজ

HTML tutorial