ঢাকা, রবিবার, জুন ২৯, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইসরায়েল যুদ্ধ পরিচালনার বৈধতা হারিয়েছে | নেতানিয়াহুর কূটনৈতিক ব্যর্থতা

মুক্তধ্বনি নিউজ ডেস্ক

মুক্তধ্বনি নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৪ জুন, ২০২৫, ০৮:১৬ পিএম

ইসরায়েল যুদ্ধ পরিচালনার বৈধতা হারিয়েছে | নেতানিয়াহুর কূটনৈতিক ব্যর্থতা
HTML tutorial

গাজা যুদ্ধের পর, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইসরায়েলের একঘরে হয়ে পড়ার স্পষ্ট লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। যুদ্ধোত্তর পরিকল্পনা নিয়ে কোনও আলোচনা না করে এবং গাজার পুনর্নির্মাণে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রত্যাখ্যান করে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু নিজের সামরিক সাফল্যকে এক ভয়াবহ কূটনৈতিক ব্যর্থতায় রূপান্তর করেছেন।

বিশ্ব সম্প্রদায় এখন স্পষ্টভাবে দেখছে যে, ইসরায়েল তার যুদ্ধ পরিচালনার আন্তর্জাতিক বৈধতা হারিয়েছে। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোতে ইসরায়েলের অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়েছে, অর্থনীতি চাপে পড়েছে এবং রাষ্ট্র হিসেবে তার সুনাম ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

৭ অক্টোবরের হামলার পর ইসরায়েল আন্তর্জাতিক সহানুভূতি পেয়েছিল, কিন্তু নেতানিয়াহু সেই সহানুভূতি কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন। এমনকি সাম্প্রতিক সময়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরকালে নেতানিয়াহুকে আলোচনার অংশ করতে অস্বীকার করা হয়।

নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে কূটনীতি একদম পিছিয়ে পড়েছে। তিনি বা তার নিযুক্ত মন্ত্রীরা আন্তর্জাতিক আলোচনা বা ন্যূনতম কূটনৈতিক দক্ষতাও প্রদর্শন করতে পারেননি। যুদ্ধোত্তর পরিকল্পনার অভাব এবং গাজার ভবিষ্যত নিয়ে কোনো রূপরেখা না থাকার কারণে ইসরায়েল শুধু সামরিকভাবে নয়, কূটনৈতিকভাবেও বড় ধরনের হুমকির মুখে পড়েছে।

বর্তমানে ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র বলতে শুধুমাত্র হাঙ্গেরি ও আর্জেন্টিনার মতো কিছু রাষ্ট্রই অবশিষ্ট রয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনও নেতানিয়াহুর ওপর বিরক্ত। এমনকি গাজার ভবিষ্যত নির্ধারণেও এখন ইসরায়েলের কোনো মতামত নেওয়া হচ্ছে না। ট্রাম্প ইসরায়েলকে উপেক্ষা করে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতা গড়ে তুলছেন।

বিশ্ব গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, গাজায় ইসরায়েলের কার্যক্রম আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে। যদিও আইডিএফ দাবি করছে তারা আইন মেনেই কাজ করছে, তবে নেতানিয়াহুর সরকার থেকে যেসব বার্তা আসছে, তা গাজাবাসীদের বিরুদ্ধে ঘৃণাপূর্ণ মনোভাবই তুলে ধরছে।

নেতানিয়াহু যদি যুদ্ধের পর গাজার জন্য একটি স্পষ্ট ও মানবিক পুনর্গঠন পরিকল্পনা ঘোষণা করতেন এবং বিশ্ব নেতাদের সহায়তা নিতেন, তাহলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারত। কিন্তু তিনি নিজের রাজনৈতিক টিকে থাকার জন্য দেশের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা বিসর্জন দিয়েছেন। এখন এর মাশুল গুনছে পুরো ইসরায়েল।

ইসরায়েলের ভবিষ্যৎ এখন অনেকটাই নির্ভর করছে মার্কিন-ইরান পারমাণবিক আলোচনা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অবস্থানের উপর। ফ্রান্সসহ একাধিক দেশ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পথে এগোচ্ছে। এইসব কূটনৈতিক রদবদলে নেতানিয়াহুর ভূমিকা প্রমাণ করে—তিনি একজন কৌশলী রাষ্ট্রনায়ক নন, বরং নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য দেশকে এক অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছেন।

মু্ক্তধ্বনি অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

Google News Icon গুগল নিউজে দেখুন

মুসলিম বিশ্ব রিলেটেড নিউজ

HTML tutorial