জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এক ঐতিহাসিক ভোটে গাজায় অবিলম্বে স্থায়ী ও নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে একটি প্রস্তাব পাস হয় — কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একাই সেই প্রস্তাবে ভেটো দেয়, যেখানে বাকি ১৪ সদস্য দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে।

এই প্রস্তাবে শুধু যুদ্ধবিরতির কথাই বলা হয়নি, বরং গাজার ভেতরে মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করার দাবিও তোলা হয়েছিল। গাজায় ২ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ চরম মানবিক সংকটে, যেখানে শিশুদের অপুষ্টি ও অনাহারে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছেই।

জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন কার্যনির্বাহী রাষ্ট্রদূত ডরোথি শিয়া বলেন, “যে কোনো প্রস্তাব, যা হামাসকে নিন্দা করে না বা নিরস্ত্র হতে বলে না, আমরা তা সমর্থন করতে পারি না।” তার এই বক্তব্য বিশ্বব্যাপী সমালোচনার মুখে পড়েছে।

মুসলিম বিশ্ব রিলেটেড নিউজ

সিরিয়া সম্পর্কে রাসুল (সাঃ)-এর ভবিষ্যদ্বাণী এবং বর্তমান প্রেক্ষাপট

সিরিয়ার দামেস্কে ইসরাইলের আক্রমণ এবং তুর্কি সমর্থিত বাহিনীর মানবিজ দখল

ইসরায়েল যুদ্ধ পরিচালনার বৈধতা হারিয়েছে | নেতানিয়াহুর কূটনৈতিক ব্যর্থতা

যুদ্ধ বন্ধে ২০০ কোটি ডলারের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিল হামাস!

বিশ্লেষকরা বলছেন, আমেরিকা মূলত যুদ্ধ থামাতে নয় বরং ইসরায়েলের আক্রমণাত্মক অবস্থানকে সমর্থন করছে। ফলে হাজার হাজার নিরপরাধ শিশু ও নারী প্রাণ হারাচ্ছে।

রয়টার্সের রিপোর্ট অনুযায়ী, গাজায় এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি অভিযানে প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ৫৪,০০০-এর বেশি মানুষ, যাদের বড় অংশই শিশু ও নারী। গড়ে প্রতিদিন নতুন করে মৃত্যু হচ্ছে অসংখ্য শিশুর, যাদের অনেকেই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে।

আমেরিকা ও ইসরায়েল মিলে নতুনভাবে Gaza Humanitarian Foundation (GHF) নামে একটি বিতর্কিত সাহায্যব্যবস্থা চালু করেছে, যা জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বর্জন করেছে। কারণ এই সিস্টেমকে পক্ষপাতদুষ্ট, সামরিক নির্ভর এবং বাস্তুচ্যুতির উৎস বলা হয়েছে।

স্লোভেনিয়ার রাষ্ট্রদূত জাতিসংঘে বলেন, “Enough is enough. খাদ্যকে আর অস্ত্র বানাবেন না। শিশুদের উপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়া বন্ধ করুন।”

অনেক কূটনীতিক এবং মানবাধিকার সংস্থা বলছে, “আমেরিকার এই ভেটো আসলে যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করে, যা সরাসরি শিশুদের হত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের সমর্থন হিসেবে দেখা হচ্ছে।”

নিরাপত্তা পরিষদে ভেটো দিলেও, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্রস্তাব উত্থাপন হতে যাচ্ছে, যেখানে কোনো দেশের ভেটোর ক্ষমতা নেই। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই প্রস্তাব সহজেই পাস হবে এবং এতে আমেরিকার অবস্থান আরও কোণঠাসা হতে পারে।

এই মুহূর্তে গোটা বিশ্ব দেখছে—কে শিশু হত্যার পক্ষে আর কে নিরীহ প্রাণ রক্ষায় আন্তরিক। ইতিহাস এই অন্যায় ও পক্ষপাত ভুলবে না।