সিদ্ধিরগঞ্জে ব্যবসায়ী ও নারী অপহরণ করে নির্যাতন, মুক্তিপণ দাবির ঘটনায় গ্রেপ্তার ৫

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে এক ব্যবসায়ী ও এক তরুণীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার (২৪ জুন) সন্ধ্যায় সাইনবোর্ড এলাকায়। পরদিন (২৫ জুন) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহীনূর আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন:
বরগুনার তালতলী উপজেলার মো. সামছুল আলমের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন (৩৮),
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার মৃত মনু মিয়ার ছেলে মহিন উদ্দিন (৩৬),
ফরিদপুরের সালথা উপজেলার আক্কাস শেখের ছেলে হৃদয় শেখ (৩০),
চাঁদপুরের মতলব থানার শাহ আলমের ছেলে ইমরান (২০),
এবং মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মৃত আবুল হোসেন মৃধার ছেলে খলিল (৩৪)।
তারা সবাই সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি সাহেবপাড়া ও বাতেনপাড়া এলাকায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতেন।
অপহরণ ও নির্যাতনের বিবরণ:
পুলিশ ও ভুক্তভোগী পরিবারের সূত্রে জানা গেছে, অপহৃতরা হলেন ব্যবসায়ী শাহিন সিকদার (৪২) ও তার পূর্বপরিচিত হাফিজা আক্তার (২৯)। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে সাইনবোর্ড ফুটওভার ব্রিজের পাশে ব্যক্তিগত আলাপের জন্য দেখা করেন তারা। এ সময় প্রধান অভিযুক্ত সাখাওয়াত হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে অসৌজন্যমূলক আচরণ শুরু করেন এবং পূর্বপরিকল্পিতভাবে সঙ্গে থাকা চার সহযোগীকে ডেকে এনে জোরপূর্বক তাদের মাইক্রোবাসে তুলে নেয়।
বাংলাদেশ রিলেটেড নিউজ
এরপর মিতালী মার্কেটের দ্বিতীয় তলার একটি নির্জন কক্ষে নিয়ে গিয়ে ভিকটিমদের আটকে রাখা হয়। সেখানেই অপহরণকারীরা ভয়ভীতি দেখিয়ে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণের অর্থ দিতে অস্বীকৃতি জানালে লোহার হাতুড়ি ও এসএস পাইপ দিয়ে নৃশংসভাবে মারধর করা হয় ভিকটিমদের। বাধ্য হয়ে তারা আত্মীয়দের ফোনে মুক্তিপণ চেয়ে সহায়তা চান।
এক আত্মীয়ের সন্দেহ হওয়ায় তিনি বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করেন। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে ভিকটিমদের উদ্ধার এবং পাঁচ অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করে। ঘটনাস্থল থেকে একটি লোহার হাতুড়ি ও দুটি এসএস পাইপ উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযানের সময় আরও কয়েকজন অভিযুক্ত পালিয়ে যায়।
পুলিশের বক্তব্য:
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহীনূর আলম বলেন, “ভিকটিমদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে অপহরণ, নির্যাতন ও মুক্তিপণ দাবির ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। পলাতক অপরাধীদের ধরতে অভিযান চলমান রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, “ভিকটিমদের সঙ্গে পূর্বপরিচয়ের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পরিকল্পিতভাবে এই অপহরণ ও নির্যাতন করা হয়েছে। এটি ছিল সম্পূর্ণ অর্থলোভজনিত একটি অপরাধমূলক কার্যক্রম।”
মু্ক্তধ্বনি অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন